চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার ১০টিপস

চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার ১০টিপস নিয়ে আজকের এই পোস্ট। আপনি যদি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাবেন ভেবে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি আপনার জন্য। 

চাকরির-ইন্টারভিউতে-সফল-হওয়ার-১০টিপস

এই পোস্টে আমরা জানব কিভাবে চাকরির ইন্টারভিউ দিলে সফল হওয়া যায়। এই পোস্টে আমরা চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার দশটি টিপস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিচে ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলোঃ 

পোস্ট সূচীপত্রঃ চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার ১০টিপস

চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার ১০টিপস

আপনি কি চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার ১০টিপস গুলো জানতে চান যা আপনাকে চাকরি পেতে সাহায্য করবে। এই টিপসগুলো আপনাকে আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে। যা আপনার ইন্টারভিউ বোর্ডে ভালো ফলাফল করতে সাহায্য করবে। চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার আগে অবশ্যই জানা উচিত কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হয়। 


এই পোস্টে আমরা সে সম্পর্কেই বিস্তারিত বর্ণনা করবো। আপনি যদি চাকরি করতে চান এবং সেখানে সফল হতে চান তাহলে নিচের এই পোস্টগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। আশা করছি এগুলোই আপনাকে চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হতে সাহায্য করবে। ইন্টারভিউ হল নিজের দক্ষতা ওর ব্যক্তিত্ব প্রদর্শনের সুযোগ। সঠিক প্রস্তুতি থাকলে অবশ্যই আপনি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে পারেন। 

ইন্টারভিউয়ের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিন

আপনি যদি মনে করেন কোন জায়গায় চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাবেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রথমত আপনাকে যে কোম্পানি তে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাবেন সেই কোম্পানি সম্পর্কে ভালোভাবে বিস্তারিত জানতে হবে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের প্রোফাইল ঘেঁটে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখতে হবে। 

আপনাকে জানতে হবে সেই কোম্পানিতে কি কাজ করতে হয় বা কাজের পরিবেশ কেমন। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন কিভাবে আপনি সেখানে কাজ করতে পারবেন। তারপরে আপনাকে দেখতে হবে তারা আপনার কাছে কি আশা করছে। অবশ্যই আপনাকে সে বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় ঘাবড়ানো যাবে না। সব সময় মনবল দৃঢ় রাখতে হবে। এবং প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেটগুলো ভালোভাবে গুছিয়ে নিয়ে যেতে হবে। 

সময়মতো ইন্টারভিউস্থলে পৌঁছান

ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে সময় জ্ঞান ঠিক রাখতে হবে। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় কখনই দেরি করা উচিত নয়। আপনাকে চেষ্টা করতে হবে ইন্টারভিউ সময়ের ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগেই ইন্টারভিউ বোর্ডে পৌঁছে যাওয়া। সময়মতো উপস্থিতি আপনার সময় এবং ব্যবস্থাপনার দক্ষতা তুলে ধরে। এতে আপনি চাপমুক্ত থাকেন, আপনার ব্রেন পরিষ্কার থাকে এবং সঠিক উত্তর দেওয়া যায়। 

ইন্টারভিউ বোর্ডে আগে গেলে অনেক উপকার হয়। ইন্টারভিউ বোর্ডে আগে পৌঁছলে আপনি সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা পাবেন। যা আপনার ইন্টারভিউ দিতে অনেকটা সাহায্য করবে। কোন কারনে যদি দেরি হয়ে যায় তাহলে কখনোই নার্ভাস হবেন না। আপনি ইন্টারভিউ বোর্ডের কর্তৃপক্ষদের আগেই ফোন বা ইমেইল করে দেরি হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করবেন । এতে আপনার বিভ্রান্তি কিছুটা কমবে। মনে রাখবেন সময় হলো আপনার মনোভাব, পেশাদারিত্ব ও প্রস্তুতির প্রতিচ্ছবি বহন করে। 

সাধারণ প্রশ্নগুলোর অনুশীলন করুন

এই পোস্টে চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার ১০টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সাধারণ প্রশ্নগুলোর অনুশীলন করা। কেননা ইন্টারভিউয়ে আপনাকে সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নগুলোই করা হয়। তাই আপনাকে ইন্টারভিউয়ের আগ মুহূর্তে সাধারণ প্রশ্ন গুলোর অনুশীলন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

সবসময় ইন্টারভিউইয়ে সাধারণ প্রশ্নই করা হয় কেননা তারা আপনার ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা ও চিন্তাভাবনা যাচাই করতে চাই। তারা আপনার পরিস্থিতি মোকাবেলার সক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা নিতে চাই। এবং সেই কোম্পানির সাথে আপনি কতটা মানিয়ে নিতে পারেন তা যাচাই করতে চাই। তারা আপনার দুর্বলতা সম্পর্কে জানতে চাইবে, সে বিষয়ে আপনাকে আগে থেকেই একটি উদাহরণ তৈরি করতে হবে। তাই আমি বলতে চাচ্ছি ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার আগে সাধারণ প্রশ্নগুলোর অনুশীলন করুন।

পোশাকে পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন 

ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় পোশাকে পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন। কেননা এটি আপনাকে আপনার সম্পর্কে একটি শক্তিশালী বার্তা প্রকাশ করবে। আপনি যদি ইন্টারভিউ বোর্ডে সুন্দর ও সভ্য পোশাক পরিধান করে যান তাহলে সেটি আপনার পেশাদারিত্ব, ের দায়িত্ববোধ এবং প্রস্তুতির মাত্রাকে প্রকাশ করবে। তাই ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার জন্য পরিপাটি হয়ে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 
ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় অবশ্যই প্রফেশনাল পোশাক পরিধান করে যাবেন। এটি আপনার ভালো ইমপ্রেশন তৈরি করবে। আপনার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। আপনাকে একজন দায়িত্বশীল প্রার্থী হিসেবে গণ্য করা হবে। আপনার শৃঙ্খলা পূর্ণ মানসিকতা বজায় রাখবে। প্রফেশনাল পোশাক যেমন, ফরমাল শার্ট, ফরমাল প্যান্ট , টাই ও ব্লেজার, পলিশ করা জুতা ও পরিপাটি মোজা এবং চুল-দাড়ি ছেঁটে পরিপাটি রাখা। 

শরীরের ভাষা ও চোখে চোখ রাখার অভ্যাস করুন

চাকরির ইন্টারভিউ এর জন্য শরীরের ভাষা ও চোখে চোখ রাখার অভ্যাস করুন। কারণ আপনার শরীরের ভাষা এবং চোখে চোখ রেখে কথা বলার দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো আপনার আত্মবিশ্বাস, সততা ও পেশাদারিত্বের একটি শক্তিশালী ভাব প্রকাশ করে। চোখে চোখ রেখে কথা বলার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এতে ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যরা বুঝতে পারবে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী এবং প্রস্তুত। 

কিভাবে চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হয় সে সম্পর্কে আপনার জানা উচিত। সরাসরি চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। চোখে চোখ রাখার সময় মাঝে মাঝে হালকা হাসি দিন। খুব বেশি তাকিয়ে থাকলে তা অস্বস্তিকর হতে পারে তাই মাঝেমধ্যে চোখ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলুন।আপনার শরীরের ভাষা ( Body Language)  ঠিক রাখবেন। যেমন কুঁজো হয়ে বসবেন না।অস্থির ভাবে নড়াচড়া করবেন না ইত্যাদি। 

আত্মবিশ্বাস বজায় রাখুন, অহংকার নয়

যেকোনো জায়গায় আত্মবিশ্বাসী হল সবচেয়ে বড় শক্তি। তাই চাকরির ইন্টারভিউতে আত্মবিশ্বাস হল আপনার সবচেয়ে বড় অস্ত্র। নিজের উপরে আত্মবিশ্বাস থাকলে সহজেই আপনি আপনার জানা বিষয়টাকে উপস্থাপনা করতে পারবেন। তবে আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে হবে এবং অহংকারকে এড়িয়ে চলতে হবে। আত্মবিশ্বাস বজায় থাকলে আপনি আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারবেন। 

অবশ্যই আপনাকে অহংকারকে এড়িয়ে চলতে হবে। আপনার কথা বলার ধরন তাদের বুঝিয়ে দিবে আপনি কেমন। তাই তাদের সাথে কথা বলার সময় অবশ্যই নম্র ও ভদ্রতার সাথে কথা বলতে হবে এবং মুখে মিষ্টি হাসি রাখতে হবে। অহংকার যেন না হয় এমনটা বোঝার উপায় হলঃ তারা আপনাকে কোন কাজের বিষয়ে বললে কখনোই আপনি এভাবে বলবেন না যে, এই কাজ তো খুবই সহজ, আমি চোখ বন্ধ করেই করে দিতে পারি। আবার আমি সবকিছু পারি, আমাকে শেখানো লাগবে না। এমন বাক্য গুলো কখনোই বলা উচিত নয়। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।

প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা তুলে ধরুন 

চাকরির ইন্টারভিউতে আপনি শুধু মুখে বললেই হবে না। বরং আপনাকে বোঝাতে হবে যে আপনি কতটা অভিজ্ঞ ও দক্ষ। এটি আপনার বোর্ডের সদস্যদের বুঝতে সাহায্য করবে যে আপনি বাস্তবিকভাবে উপযুক্ত প্রার্থী কিনা। আপনি চাইলে তাদের বিভিন্নভাবে বোঝাতে পারেন যে আপনি প্রাসঙ্গিকভাবে এই কাজের জন্য উপযুক্ত। 


তবে খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত কোন কথাই তাদের কাছে বলবেন না। এবং অতিরিক্ত গর্ব বা আত্মপ্রশংসাও করবেন না। আপনাকে যদি প্রশ্ন করে এটি আপনি পারেন কিনা তাহলে, 'আমি পারি' এভাবে না বলে 'আমি করেছি' এভাবে বলুন এতে আপনার অভিজ্ঞতা প্রকাশ পাবে। মনে রাখবেন, দক্ষতা বলে আপনি যোগ্য আর অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে আপনি প্রস্তুত। 

ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যদের সম্মান করুন

চাকরির ইন্টারভিউতে ইন্টারভিউ বোর্ডে সদস্যদের সম্মান করুন। এটি আপনার ব্যক্তিত্ব ও আচরণগত বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে। যা ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যদের আপনার ওপর আকৃষ্ট করবে। বোর্ডের সদস্যরা বুঝতে পারবে আপনি কতটা সহযোগিতা পূর্ণ নম্র। তাদেরকে সম্মান দেখালে তারা আপনার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে ।

অনেক সময় এমনটাও হয় ব্যবহার দেখেও চাকরি দেয়। আপনি তাদের চোখে চোখ রেখে কথা বলুন এবং তারা যখন কথা বলে তাদের কথার মধ্যে কথা বলবেন না। শেষে তাদের ধন্যবাদ জানাবেন এতে তারা আপনার ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা পাবে। আপনি কতটা ভদ্র ও শ্রদ্ধাশীল তা বোর্ডের সদস্যরা আপনার কথাবার্তা ও আচরণ দেখেই বুঝে নিবে। 

শেষ কথাঃ চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার ১০টিপস 

উপরের পুরো পোস্ট জুড়ে আমরা চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার ১০টিপস গুলো বিস্তারিত জানলাম। ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য আপনাকে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। এবং ভালো ব্যবহার জানতে হবে। কোন কাজে আপনি যদি দক্ষ ও অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে তো চাকরি পাওয়া আপনার জন্য খুবই সহজ। 

আর যদি আপনি দক্ষ না হন তাহলে আপনাকে উপরের এই টিপস গুলো মেনে চলতে হবে তাহলে আপনি চাকরি পেতে পারেন। নিজেকে পরিপাটি করে এবং সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে আপনাকে ইন্টারভিউ দিতে হবে। আশা করছি উপরের পোস্টটি পড়ে চাকরির ইন্টারভিউ সম্পর্কে অনেকটা ধারণা এসেছে। পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্টে জানাবেন। 




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url