দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায়

বিয়ে করার জন্য দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায় জানা উচিত। আপনি যদি বিয়ে করতে চান এবং যদি দ্বীনদার পাত্রী বিয়ে করতে চান তাহলে দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায় গুলো এই পোস্টে জানতে পারবেন।

দ্বীনদার-পাত্রী-চেনার-উপায়

আমরা সকলেই একজন দ্বীনদার মেয়ে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা একটি মেয়ের মধ্যে কোন গুণগুলো দ্বীনদারিত্ব প্রকাশ পায়। তাহলে আসুন জেনে নেই আমরা কিভাবে দ্বীনদার পাত্রী চিনবো। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায়

দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায় 

দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায় অনেক রয়েছে। আপনি যদি বিয়ে করার জন্য একজন দ্বীনদার মেয়ে বিয়ে করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে।যেগুলো আমরা এই পোস্টে বর্ণনা করেছি। যেহেতু বিয়ে করার ক্ষেত্রে পাত্রের দ্বীনদারিতা খুবই জরুরী একটি বিষয়। 


মেয়ে দেখতে গিয়ে আপনি ইসলামী প্রশ্ন করলেই বুঝতে পারবেন মেয়ের মধ্যে দ্বীনদারী রয়েছে কিনা। আপনি মেয়েকে অনেক ধরনের প্রশ্ন করতে পারেন যেগুলো দৈনন্দিন জীবনের ইসলামী শরীয়তে করতে হয়। পাত্রীর কথা বলার ধরন এবং তার ইবাদত সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। তার কথা বলার ধরন এবং ইবাদত সম্পর্কে জানলে আপনি বুঝতে পারবেন পাত্রী দ্বীনদার নাকি দ্বীনদার নয়। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।

পাত্রী দেখতে গিয়ে কি ধরনের প্রশ্ন করতে হয়

আমরা অনেকেই জানিনা পাত্রী দেখতে গিয়ে কি ধরনের প্রশ্ন করতে হয়। তাই আমাদের জানা উচিত পাত্রী দেখতে গিয়ে কেমন প্রশ্ন করতে হয়। পাত্রী দেখার সময় আপনি তার ইবাদত ও আমল সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারেন। এ সকল প্রশ্নের উত্তর শুনলেই আপনি বুঝতে পারবেন মেয়েটি কেমন চরিত্রের। তাই পাত্রী দেখতে গিয়ে নিচের এই প্রশ্নগুলো করে জেনে নিন পাত্রী দ্বীনদারী কিনা। 

প্রথমত মেয়েকে জিজ্ঞাস করুন, সে কোরআন পড়তে পারে কিনা। বড় কোন সূরা মুখস্ত আছে কিনা। জুমআর দিন কোন সূরা পড়তে হয়। সপ্তাহে কোন কোন দিন রোজা রাখা সুন্নাহ। নফল নামাজের নিয়ত কিভাবে বাধতে হয়। দিনে কত ওয়াক্ত নামাজ এবং ওয়াক্তের নাম কি। আবার কোন ওয়াক্তে কত রাকাত ফরজ নামাজ তা জিজ্ঞেস করতে পারেন এবং সর্বমোট দিনে কত রাকাত ফরজ নামাজ রয়েছে তা জিজ্ঞাসা করতে পারে। সাধারণত এই প্রশ্নগুলো করলেই আপনি বুঝতে পারবেন মেয়ে দ্বীনদারি কি না।

পর্দা পালন ও শালীন পোশাক 

পাত্রী দেখতে গিয়ে পাত্রীর পর্দা পালন ও শালীন পোশাক সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।দ্বীনদারীত্বের দিক দিয়ে পাত্রীর পর্দা এবং পোশাক সম্পর্কে জানা উচিত। আপনি যদি পাত্রী পর্দা এবং পোশাক সম্পর্কে জানেন তাহলে বুঝতে পারবেন মেয়েটি কেমন। ইসলামী দিক দিয়ে মেয়েদের সর্বদা পর্দার আড়ালে থাকা উচিত। এবং শালীন পোশাক পরা উচিত। 
দ্বীনদার-পাত্রী-চেনার-উপায়

কোন নারীর পর্দা এবং পোশাকের শালীনতা তার চরিত্র প্রকাশ করে। শালীন পোশাক এবং পর্দা করলে শরীরকে ভালোভাবে ঢেকে রাখা যায় এতে কোন নন মাহরাম ব্যক্তি শরীরের গঠন বুঝতে পারেনা তাই পর্দা ও শালীন পোশাক পরিধান করতে হয়। পর্দা পুরুষের কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা করে। মূলত পাত্রীর পর্দা এবং শালীন পোশাক সম্পর্কে জানলে আপনি বুঝতে পারবেন সে কতটা দ্বীনদারী। 

নামাযের প্রতি যত্ন ও সময়নিষ্ঠতা

একজন দ্বীনদার পাত্রীর মধ্যে অবশ্যই নামাজের প্রতি যত্ন ও সময়নিষ্ঠতা থাকা উচিত। আপনি যদি তার নামাজের প্রতি যত্ন এবং সময়নিষ্ঠতা সম্পর্কে জানেন তাহলে পাত্রীর সম্পর্কে আপনার অনেকটা ধারণা চলে আসবে। দ্বীনদারীত্ব বজায় রাখার জন্য অবশ্যই নামাজের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত। কেননা নামাজই হল আমাদের একমাত্র ফরজ কাজ যেটা করতে বার বার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আপনি পাত্রীকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন সেই দিনে কত ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে এবং কোন নামাজে কত রাকাত ফরজ নামাজ পড়তে হয়। নামাজ পড়ার জন্য সময়নিষ্ঠতাও টাকা প্রয়োজন। কেননা প্রত্যেক ওয়াক্তে নির্দিষ্ট একটি টাইম থাকে যার মধ্যে সে ওয়াক্তের নামাজ পড়তে হয়। তাই নামাজের প্রতি যত্ন ও সময়নিষ্ঠতা পাত্রীর দ্বীনদারী প্রকাশ করে। 

ইসলামী জ্ঞান ও কুরআন হাদীসের চর্চা

দ্বীনদার হতে হলে অবশ্যই একজন ব্যক্তির মধ্যে ইসলামী জ্ঞান ও কুরআন হাদিসের চর্চা থাকা প্রয়োজন। কেননা নিয়মিত ইসলামিক জ্ঞান অর্জন ও কোরআন হাদিসের চর্চা না করলে কোনভাবেই দ্বীনদার হওয়া সম্ভব না। আপনার মধ্যে যদি দ্বীনদারী থাকে তাহলে অবশ্যই প্রতিদিন ইসলামী জ্ঞান অর্জন এবং কোরআন হাদিসের চর্চার করা উচিত। তাই মেয়ে দেখতে গেলে এই বিষয়টা খেয়াল রাখবেন। 

দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায় গুলোর মধ্যে এটি একটি অন্যতম। কেননা কোন ব্যক্তি যদি দৈনিক ইসলামিক জ্ঞান এবং কোরআন হাদিসের চর্চা করে তাহলে তার মধ্যে অবশ্যই দ্বীনদারীত্ব থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বিয়ে করার জন্য যেহেতু দ্বীনদারী পাত্রী প্রয়োজন তাই পাত্রীর সম্বন্ধে এই বিষয়গুলো জানা খুবই জরুরী। 

 আখলাক বা চরিত্রের পরিশুদ্ধতা

দ্বীনদার পাত্রী চেনার জন্য তার আখলাক বা চরিত্রের পরিশুদ্ধতা সম্পর্কে জানা উচিত।একজন দ্বীনদার মেয়ের চরিত্র খুবই ভালো হওয়া উচিত। পাত্রীর কথাবার্তা বা অঙ্গভঙ্গি দেখলেই বোঝা যায় মেয়েটির চরিত্র কেমন। আখলাক বা চরিত্রের পরিশুদ্ধতা একজন ব্যক্তির দ্বীনদারীত্বের প্রকাশ ঘটায়। 

আপনাকে দেখতে হবে মেয়েটির চরিত্র কেমন। সে তাদের সাথে মেলামেশা করে। পর পুরুষের সাথে কথাবার্তা বলে কি না তা জানতে হবে। বর্তমান যুগে প্রায় সকলেই প্রেম নামক পাপ কাজে লিপ্ত থাকে। আপনাকে এ বিষয়ে নজর রাখতে হবে পাত্রীর কোন প্রেম ভালোবাসা আছে কিনা। এবং পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে কেমন আচরণ করে। মোটামুটি এগুলোই একজন ব্যক্তির আখলাক কেমন তা প্রকাশ করে। 

হারাম ও হালালের প্রতি সচেতনতা

দ্বীনদারীত্ব বজায় রাখতে প্রত্যেকের হারাম ও হালাল এর প্রতি সচেতনতা থাকা উচিত। পাত্রী দেখতে গেলে এই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত। কেননা হারাম ও হালাল যদি না মানে তাহলে সে মেয়ে কখনোই দ্বীনদার হতে পারে না। দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সবকিছুর মধ্যেই হালাল ও হারাম রয়েছে তাই আপনার জীবন সঙ্গী হালাল নাকি হারাম পছন্দ করে সে সম্পর্কে আপনার জানা উচিত। 

যে মেয়ে হারাম ও হালালের প্রতি অসচেতন সেই মেয়েকে বিয়ে না করাই উত্তম। হারাম কাজ করলে বা হারাম খেলে কখনোই সুখী হওয়া যায় না। তাই যে মেয়ে হারাম ও হালালের প্রতি সচেতন তেমন মেয়ে বিয়ে করতে হবে। আপনি কোন পাত্রীকে ইসলামের হারাম ও হালাল বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন করলেই বুঝতে পারবেন সে হালাল ও হারাম বোঝে কিনা এবং এগুলোর প্রতি সে সচেতন কিনা। 

ধৈর্য সহনশীলতা ও বিনয়ী আচরণ

দ্বীনদার মেয়ের মধ্যে অবশ্যই এই গুণগুলো থাকা উচিত। ধৈর্য সহনশীলতা ও বিনয়ে আচরণ মানুষের চরিত্রের বড় উদাহরণ। ধৈর্যশীল মেয়ে অনেক ভালো হয় কারণ তারা আল্লাহর উপর ভরসা করে। আপনি যদি ধৈর্যশীল মেয়ে বিয়ে করে তাহলে আপনি অবশ্যই সুখী হবেন। এবং আপনার স্ত্রীর যদি বিনয়ী আচরণ হয় তাহলে আপনি সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারবেন। 

ধরুন আপনার স্ত্রী আপনার কাছে কিছু বায়না করলো এবং আপনি তাকে বললেন আমার কাছে এখন টাকা নেই, যখন টাকা হবে তখন কিনে দিবো। এবার সে যদি ধৈর্য ধারণ করে তাহলে চিন্তা করুন আপনার জীবনটা কত সুন্দর হতে পারে। আর আপনার স্ত্রী যদি বলে আমাকে এক্ষুনি কিনে দাও তাহলে আপনার জীবন ধ্বংস করতে এই নারী যথেষ্ট। তাই পাত্রী দেখার সময় অবশ্যই ধৈর্য সহনশীল ও বিনয়ী আচরণ এমন মেয়ে বিয়ে করা উচিত।

পরিবার ও স্বামীর প্রতি দায়িত্বশীল  

পরিবার ও স্বামীর প্রতি দায়িত্বশীল এই ব্যাপারটাও পাত্রী কেমন দ্বীনদার তা বুঝতে সাহায্য করবে। একজন দ্বীনদার মেয়ে সব সময় তার পরিবার ও স্বামীর প্রতি দায়িত্বশীল হয়। সে তার পরিবার ও তার স্বামীকে কখনোই মানসিক চাপ দিতে চাইবে না। তাই সবসময় পাত্রী দেখার সময় এই ব্যাপারটা খেয়াল রাখতে হবে। 
দ্বীনদার-পাত্রী-চেনার-উপায়

কোন মেয়ের মধ্যে যদি এ ধরনের গুণ না থাকে তাহলে সে পাত্রী দ্বীনদার হতে পারে না।বর্তমানে অনেক মেয়ে রয়েছে যারা স্বামীর প্রতি অযত্নশীল। এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে সবসময় খারাপ আচরণ করে। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন উপরের এই গুণগুলো যদি কোন মেয়ের মধ্যে থাকে তাহলে সেই মেয়ে অবশ্যই দ্বীনদারী। তাকে নিশ্চিন্তে বিয়ে করা যেতে পারে। 

শেষ কথাঃ দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায় 

এতক্ষণ আমরা দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায় গুলো বিস্তারিত জানালাম। আপনি যদি দ্বীনদার মেয়ে বিয়ে করতে চান তাহলে অবশ্যই সে মেয়ের মধ্যে উপরের এই গুণগুলো থাকতে হবে তবেই সে দ্বীনদারি হবে। দ্বীনদার মেয়ে বিয়ে করার জন্য অবশ্যই আপনাকেও দ্বীনদার হতে হবে। দ্বীনদার মেয়ে বিয়ে করলে আপনার সংসারে অবশ্যই সুখ শান্তি থাকবে। 


একজন দ্বীনদার মেয়ে সব সময় তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের প্রতি দায়িত্বশীল হয়। একজন দ্বীনদার মেয়ের চরিত্রও ভালো হয়। আপনার স্ত্রী যদি দ্বীনদার হয় তাহলে সে সর্বদা পর্দা এবং শালীন পোশাক পরিধান করবে। তবে স্বামী হিসেবে আপনার এ বিষয়গুলোর উপর সচেতন থাকতে হবে। আশা করছি দ্বীনদার পাত্রী কিভাবে চিনবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। পোস্টটি কেমন লেগেছে তা কমেন্টে জানাবেন। 
 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url